কাঠোয়ামারা গ্রামে মণিপুরী সম্প্রদায়ের বেশ কয়েকটি পরিবার বসবাস করত। সেদিন পাকিস্তানি সেনারা স্থানীয় রাজাকার আব্দুন নুর ও তার সহযোগীদের নিয়ে গ্রামে আক্রমণ চালায়। তারা গ্রামবাসীদের ধরে নিয়ে যায় এবং আতেন সিং, কুল চন্দ্র সিং, কৃষ্ণমোহন সিং, অক্ষয় কুমার সিং, নরেন্দ্র কুমার সিং, আব্দুন নুর (গাজীপুর গ্রামের) ও আব্দুল হাই-কে চুনারুঘাট পাকিস্তানি ক্যাম্পে নিয়ে যায়।
এরপর তাদেরকে খোয়াই নদীর তীরে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে পাকিস্তানি সেনারা ও রাজাকাররা ধারালো দা দিয়ে তাদের নির্মমভাবে কুপিয়ে হত্যা করে এবং লাশ নদীতে ভাসিয়ে দেয়।
এটি ছিল পাকিস্তানি বাহিনী ও তাদের সহযোগী রাজাকারদের দ্বারা সংঘটিত একটি নির্দিষ্ট জাতিগত ও ধর্মীয় সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে সহিংসতার ঘটনা।
মণিপুরী সম্প্রদায়ের মানুষদের টার্গেট করে হত্যা করা হয়েছিল, যা বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে সংখ্যালঘু নিধনের নীলনকশার অংশ।
স্থানীয় সহযোগীদের (রাজাকার) ভূমিকা এই ঘটনাকে আরও ভয়াবহ করে তোলে।
এই গণহত্যার শিকার ব্যক্তিদের পরিবার ও স্থানীয়রা আজও সেই ভয়াবহ দিনের স্মৃতি বহন করে। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে খোয়াই নদীর পাড়ের এই হত্যাকাণ্ড একটি মর্মান্তিক অধ্যায় হিসেবে চিহ্নিত।
সূত্র:
বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ (৩য় খণ্ড)
স্থানীয় সাক্ষাৎকার ও মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক গবেষণা
মন্তব্য করুন