ঢাকা শনিবার, ২১ জুন ২০২৫, ৭ আষাঢ় ১৪৩২
মুক্ত মনমুক্ত চিন্তামুক্তি গাথা
ইউক্রেনের কাজ শেষ, এবার ধ্বংস করবে বাংলাদেশ?

জাতিসংঘের “মানবিক করিডোর” নাকি মার্কিন সামরিক আগ্রাসন?

সাইফুর রহমান
১৪ মে ২০২৫, ১০:৫৭ এএম
১৪ মে ২০২৫, ১১:০৪ এএম
জাতিসংঘের “মানবিক করিডোর” নাকি মার্কিন সামরিক আগ্রাসন?

ইউক্রেন যুদ্ধ এখন একটি ক্লান্তিকর অধ্যায়ের শেষপ্রান্তে। পশ্চিমা শক্তিগুলো, বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, দীর্ঘদিন ধরে “মানবিক সহায়তা”, “গণতন্ত্র রক্ষা”, ও “নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ” – এই শব্দগুলো ব্যবহার করে একের পর এক রাষ্ট্রে সামরিক হস্তক্ষেপ চালিয়ে আসছে। এবার সেই চোখ পড়েছে দক্ষিণ এশিয়ার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূ-রাজনৈতিক অবস্থানে থাকা রাষ্ট্র—বাংলাদেশের ওপর।

সম্প্রতি জাতিসংঘের ব্যানারে “মানবিক করিডোর” স্থাপনের প্রস্তাব এসেছে, যার মাধ্যমে রোহিঙ্গা শরণার্থী সংকট সমাধান, দুর্যোগকালীন সহায়তা, ও সামগ্রিক নিরাপত্তা প্রদানের অজুহাতে আন্তর্জাতিক বাহিনী, বিশেষ করে মার্কিন সেনা, বাংলাদেশে প্রবেশ করতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

এই উদ্যোগের অন্তরালে কী আছে?

১. সার্বভৌমত্বের ওপর হুমকি

যদি কোনো বিদেশি সেনা বাংলাদেশে ঢোকে, তবে তা সরাসরি দেশের সার্বভৌমত্বের ওপর আঘাত। অতীতে ইরাক, আফগানিস্তান, লিবিয়া, ও সিরিয়াতে “মানবিক সহায়তা”র নামে যেসব অভিযান চালানো হয়েছে, তার ফলাফল আজ ভয়াবহ। বাংলাদেশের ক্ষেত্রেও কি একই কৌশল প্রয়োগ করা হবে?

২. চীন-ভারত-যুক্তরাষ্ট্র ত্রিমুখী দ্বন্দ্ব

বাংলাদেশ এখন একটি ভূ-রাজনৈতিক টানাপোড়েনের কেন্দ্রবিন্দুতে। বঙ্গোপসাগর ও দক্ষিণ এশিয়ার এই অঞ্চলে চীনের প্রভাব ঠেকাতে যুক্তরাষ্ট্র যেকোনো মূল্যে সামরিক উপস্থিতি চায়।

৩. চুক্তির সম্ভাব্য ফাঁদ

যেকোনো সামরিক বা নিরাপত্তা বিষয়ক চুক্তি (যেমন SOFA বা ACSA) জাতীয় নিরাপত্তার জন্য দীর্ঘমেয়াদে বিপজ্জনক হতে পারে। এমন চুক্তি বাংলাদেশকে একটি “সফট কলোনি”তে পরিণত করতে পারে।

৪. ভেতর থেকে বিভাজনের কৌশল

দেশে বিভাজন তৈরি করে অভ্যন্তরীণ অস্থিরতা সৃষ্টি, এরপর সেই অস্থিরতার সমাধান দিতে “মানবিক হস্তক্ষেপ” – এই কৌশল বহুবার ব্যবহৃত হয়েছে।

ইউক্রেনের মতো আরেকটি ভূ-রাজনৈতিক দাবার গুটি হয়ে ওঠার আগে বাংলাদেশকে সচেতন হতে হবে। স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব কোনো সাময়িক সুবিধার বিনিময়ে বিক্রি করা যায় না। মানবিক সহায়তার নামে সামরিক উপস্থিতির আড়ালে যেন আরেকটি আগ্রাসনের ইতিহাস না লেখা হয়—এটাই এখন জাতির সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার হওয়া উচিত।

ছবিতে দেখা যাচ্ছে, ইতিমধ্যেই ইউক্রেনের কার্গো বিমানে জাতিসংঘের লোগো সম্বলিত সামরিক যান, মিলিটারি হেলিকপ্টার ও সরঞ্জাম বাংলাদেশে এসে পৌঁছেছে। এমন অবস্থায় মিয়ানমারের জান্তা সরকার নিশ্চয়ই বসে থাকবে না। মার্কিন ডিপ স্টেটের পুতুল ইউনূস তার ওপর অর্পিত দায়িত্ব ঠিকঠাক পালন করে চলেছে। দেশের বোকা জনগণ এখনো নোবেলে ডুবে আছে।

নোবেল ম‍্যান আমাদের সেনাবাহিনীকে একটি অনাকাঙ্ক্ষিত যুদ্ধে জড়িয়ে ফেলার সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। একই সাথে মাঠে নেমেছে ডিপ স্টেটের তহবিলে পরিচালিত লোকজনও। নিজের দেশের সার্বভৌমত্ব বিপন্ন করে আমরা কোনো পরাশক্তির যুদ্ধে লিপ্ত হতে চাই না।

অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

১৯ জুন ১৯৭১: মুক্তিযুদ্ধের অগ্রগতি ও আন্তর্জাতিক সমর্থন

বাগেরহাটের কান্দাপাড়া পৈশাচিক গণহত্যা

পাগলা দেওয়ান মসজিদ গণহত্যা

১৮ জুন ১৯৭১: মুক্তিযুদ্ধের রক্তঝরা দিন ও কান্দাপাড়ার পৈশাচিক গণহত্যা

১৭ জুন ১৯৭১: মুক্তিযুদ্ধের গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাবলি

১৬ জুন ১৯৭১: মুক্তিযুদ্ধের ক্রান্তিলগ্নে আন্তর্জাতিক সমর্থন ও যুদ্ধের মোড় পরিবর্তন

বাজেট ২০২৫-২৬ / বেহাল অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে ঋণের বোঝা আরো বাড়বে

নগদের মাধ্যমে সরকারি ভাতার ১৭১১ কোটি টাকা গায়েব!

বাজেট ২০২৫-২৬ / ফরমায়েশের ঝাঁপি, বোঝা বাড়ার ভয়

বিনিয়োগ-কর্মসংস্থান বৃদ্ধির নির্দেশনা নেই / শিল্প-ব্যবসায় করের বোঝা বাড়ল

১০

মূল্যস্ফীতি ও রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা অবাস্তব

১১

মধ্যবিত্তের ওপর করের বোঝা, বাড়বে সংসার খরচ

১২

সংস্কার নাকি অপচয়? / নতুন নোটের পেছনে ২০ হাজার কোটি টাকার গল্প

১৩

৩ জুন, ১৯৭১: ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটে ঘটনাবলি

১৪

শহীদ বুদ্ধিজীবী / এ কে এম সিদ্দিক বিশ্বাস

১৫

শহীদ বুদ্ধিজীবী / কোরবান আলী

১৬

শহীদ বুদ্ধিজীবী / শান্তিময় খাস্তগীর

১৭

শহীদ বুদ্ধিজীবী / এ কে এম মনিরুজ্জামান

১৮

১০ বছরে সর্বনিম্ন বিনিয়োগ, স্থবির অর্থনীতি

১৯

২ জুন ১৯৭১: বাংলাদেশের স্বাধীনতার পক্ষে আন্তর্জাতিক সমর্থন

২০