বর্তমানে আমাদের দেশ এক গভীর অস্থিরতা ও অনিশ্চয়তার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। প্রতিদিনই কোথাও না কোথাও ঘটে যাচ্ছে ভয়াবহ ও নৃশংস ঘটনা। বিচারহীনতার সংস্কৃতি, রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং সামাজিক অবক্ষয়ের কারণে সাধারণ মানুষের আইনের প্রতি আস্থা নষ্ট হয়ে গেছে। এর ফলে সমাজে নৈরাজ্য ও বিশৃঙ্খলা ছড়িয়ে পড়েছে।
সম্প্রতি দেশের বিভিন্ন স্থানে একের পর এক ভয়াবহ অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে। চাঁদাবাজি, মাদক ব্যবসা, আধিপত্য বিস্তার, পারিবারিক সহিংসতা, ধর্ষণ, হত্যা, ডাকাতি, অপহরণ, ছিনতাই—সবকিছুই বেড়ে গেছে। কিশোর গ্যাংয়ের দৌরাত্ম্য, অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্রের ব্যবহার এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর হামলার ঘটনা উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে। রাজধানীর মিটফোর্ড হাসপাতালের সামনে প্রকাশ্যে ব্যবসায়ীকে হত্যা, চাঁদপুরে মসজিদের ইমামের ওপর হামলা, খুলনায় যুবদল নেতাকে গুলি ও রগ কেটে হত্যা, মুন্সীগঞ্জে ব্যবসায়ীকে ছুরিকাঘাতে হত্যা—এসব ঘটনা মানুষের স্বস্তি কেড়ে নিয়েছে।
পুলিশ সদর দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের প্রথম পাঁচ মাসে ডাকাতি ও দস্যুতার মামলা, হত্যা মামলা, নারী ও শিশু নির্যাতন, অপহরণ—সবকিছুর পরিসংখ্যান আগের বছরের তুলনায় অনেক বেড়েছে। শুধু তাই নয়, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দায়িত্ব পালন করতে গেলেও তাদের ওপর হামলার ঘটনা বাড়ছে। এসব ঘটনা দেশের ভাবমূর্তিকে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলেও ক্ষুণ্ন করছে। বিনিয়োগ, পর্যটন ও অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। গ্লোবাল পিস ইনডেক্সে বাংলাদেশের অবস্থানও অবনতি হয়েছে।
এ অবস্থায় জননিরাপত্তা নিশ্চিত করা অত্যন্ত জরুরি। বিচারহীনতার সংস্কৃতি দূর করে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করতে হবে। অপরাধ দমনে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সক্ষমতা ও মনোবল পুনরুদ্ধার করতে হবে। কোনো সভ্য সমাজে এ ধরনের বর্বরতা ও নৈরাজ্য কখনোই গ্রহণযোগ্য নয়।
জননিরাপত্তা নিশ্চিত করুন—এটাই সময়ের দাবি।
মন্তব্য করুন