মাগুরার আলোচিত শিশু আছিয়া ধর্ষণ ও হত্যা মামলায় জেলার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনালে আরও ১০ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়েছে। গতকাল ট্রাইব্যুনালের বিচারক এম জাহিদ হাসানের আদালতে মামলার দশজন সাক্ষীর সাক্ষ্য নেওয়া হয়। আসামিরা এ সময় আদালতে হাজির ছিলেন।
এদিন সাক্ষ্য দিয়েছেন আছিয়ার বোন মোছা. হামিদা এবং জাতীয়তাবাদী যুবদল ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সদস্য সচিব রবিউল ইসলাম নয়ন। ঘটনার পর নয়ন শিশুটির চিকিৎসার দায়িত্ব গ্রহণ করেন।
সাক্ষ্য প্রদান শেষে আদালত থেকে বেরিয়ে যুবদল নেতা রবিউল ইসলাম নয়ন দ্রুত সময়ের মধ্যে বিচার কার্য সম্পন্ন করতে বিচার সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানান।
মামলার রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনালের পিপি মনিরুল ইসলাম মুকুল বলেন, মামলায় অভিযুক্ত আসামি ধর্ষণের শিকার শিশুটির বোনের শ্বশুর হিটু শেখ, শাশুড়ি জাহেদা বেগম এবং তাদের দুই ছেলে সজিব শেখ এবং রাতুল শেখের উপস্থিতিতেই সাক্ষ্যগ্রহণ চলছে।
এক নাগাড়ে তৃতীয় দিন পর্যন্ত মোট ১৬ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়েছে। বুধবারও সাক্ষ্যগ্রহণ রয়েছে। সেখানে হাসপাতালে চিকিৎসায় দায়িত্বরত ডাক্তার নার্সসহ ৫ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হবে বলে তিনি জানান।
প্রসঙ্গত, মাগুরার শ্রীপুর উপজেলার জারিয়া গ্রাম থেকে শহরের নিজনান্দুয়ালী এলাকায় বড় বোনের বাড়িতে বেড়াতে গিয়ে ধর্ষণের শিকার হয় আট বছর বয়সী আছিয়া। ধর্ষণের পর তাকে শ্বাসরোধে হত্যার চেষ্টাও করা হয়। ৬ মার্চ বেলা সাড়ে ১১টার দিকে অচেতন অবস্থায় শিশুটিকে মাগুরা ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে ১৩ মার্চ দুপুরে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শিশুটি মারা যায়। সেদিন সন্ধ্যায় শিশুটির মরদেহ হেলিকপ্টারে করে মাগুরায় নেওয়া হয়। মাগুরা শহরের নোমানী ময়দানে প্রথম জানাজা ও পরে শ্রীপুর উপজেলার সব্দালপুর ইউনিয়নের সোনাইকুন্ডী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে দ্বিতীয় জানাজা শেষে স্থানীয় সোনাইকুন্ডী গোরস্থানে মরদেহ দাফন করা হয়।
জানাজার পর উত্তেজিত জনতা শিশুটির বোনের শ্বশুরবাড়িতে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। এর আগে ৮ মার্চ শিশুটির মা মাগুরা সদর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে মামলা করেন। মামলায় চারজনকে আসামি করা হয়।
মন্তব্য করুন