দেশের বাম ছাত্রসংগঠনগুলো কেন্দ্রীয় কাউন্সিল করার সময় ঢাবির আইনের শিক্ষক আসিফ নজরুলকে প্রধান অতিথি বা বিশেষ অতিথি করেছে অনেকবার। আমার কাছে কাউন্সিলের চাঁদা নেবার সময় আমি একটি বাম সংগঠনের নেতাদের কাছে আসিফ নজরুলকে বিশেষ অতিথি করা নিয়ে প্রশ্ন তুললে, তারা কোনো সদুত্তর দিতে পারেনি। আমি যখন বললাম, তোমরা জননী জাহানারা ইমামের কবরে ফুল দিতে যাও, আবার জননী জাহানারা ইমামের সাথে গাদ্দারি করা ডানপন্থী লোকটিকে অতিথি করো। এই পরস্পরবিরোধী চর্চার মধ্য দিয়ে তোমরা কোন রাজনীতির বিকাশ চাও?
ছাত্র সংগঠনটির কর্মীরা ইনিয়ে-বিনিয়ে আসিফ নজরুলের সরকার বিরোধিতার প্রসঙ্গটি সামনে আনলো। আমি যখন জানতে চাইলাম মৌলবাদী ডানপন্থী ছাত্র সংগঠনগুলো বামপন্থী কোনো শিক্ষককে প্রধান অতিথি বা বিশেষ অতিথি করেছে কখনও? তখন দেখি নেতা কর্মীরা এ-ওর মুখের দিকে তাকাচ্ছে, সুস্পষ্ট কোনো উত্তর নাই। ডানপন্থী মৌলবাদী ভাবধারার শিক্ষকটির সাথে বাম নেতারা সহাস্যবদনে কর্মীদের ওয়াজ-নসিহত করেছেন!
এই হচ্ছে সমদূরত্বে থাকা বামপন্থীদের রাজনৈতিক বোধ! দিনশেষে বামের কর্মীরা আত্মপরিচয়ের সঙ্কটে ভুগছে। বাঙালিত্ব ও মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের অতন্দ্র প্রহরী হতে পারেনি।
বাম পতাকা হাতে ডানের ধুরন্ধর মার্কিনী অ্যাক্টিভিস্টদের বয়ানে আস্থা রাখছে, এ সমস্ত ডলারখেকো মার্কিন অ্যাক্টিভিস্ট তথা স্বতন্ত্র বাম নামে পীরের দরগার ভাড়াটে হিসাবে ব্যবহৃত হয়েছে।
ষাটের/সত্তরের দশকের বাম নেতারা জীবদ্দশায় ডলার অভ্যুত্থানের পক্ষে প্রাণাতিপাত করেছেন। অথচ মার্কিনীরাই বলছে টাকা ঢালা হয়েছে, ভাড়া করা হয়েছে। আর তাঁরা বিপ্লব না গণঅভ্যুত্থান? এই নিয়ে বাহাসে লিপ্ত, কর্মীরা দিকভ্রান্ত!
দিনশেষে সংস্কারের নামে দেশের নীতি নির্ধারণী কাজ করছে মার্কিনী নাগরিক ও সাম্রাজ্যবাদের দালালরা।
সাম্রাজ্যবাদের এজেন্ট মৌলবাদী একাত্তরের ঘাতকদের সাথে বসে চায়ের কাপে বিস্কুট চুবিয়ে খাওয়াটাই আরাধ্য ছিল তাঁদের এ রাজনৈতিক জীবনের। এ এক অনন্য অর্জন!
লালের পতাকা হাতে লাল-লাল করে চেঁচিয়ে ডানের হাতকে - প্রকারান্তরে মার্কিনীদের এজেন্টদের শক্তিশালী করার জন্যে ইতিহাস তাঁদের মনে রাখবে।
দেশের অর্থনীতি নিম্নগামী, আরও একটু নীচে নামলে বিপ্লব তরান্বিত হবে আশা করছি।
বিপ্লব দীর্ঘজীবী হোক
লেখক: সাবেক ছাত্রনেতা ও এক্টিভিস্ট আকরামুল হক’র ফেসবুক থেকে
মন্তব্য করুন