প্রতিনিধিদলের অন্য দুই সদস্য, লেবার পার্টির সাংসদ রেজিল্যান্ড প্রেন্টিস এবং কনজারভেটিভ পার্টির সাংসদ টবি জেসেলও বটমলির বক্তব্যে একমত পোষণ করেন। বটমলি পাকিস্তানের অভিযোগ খারিজ করে বলেন, পূর্ব বাংলার ধ্বংসযজ্ঞ ভারতীয় সেনাদের দ্বারা সম্ভব হয়নি। তিনি নিজ চোখে ধ্বংসযজ্ঞ দেখে এসেছেন।
প্রতিনিধিদল এই দিন কলকাতা থেকে দিল্লিতে এসে ভারতের কেন্দ্রীয় পুনর্বাসনমন্ত্রী আর কে খাদিলকরের সঙ্গে বৈঠক করেন। তারা সতর্ক করেন, দ্রুত সমাধান না হলে ভারত-পাকিস্তান সংঘর্ষ বাঁধতে পারে।
পাশাপাশি, পশ্চিম জার্মানির বিচারমন্ত্রী ড. ই হইনসেন এবং সাংসদ এস ভিউগেন সাইন ও ড. রলফ মাইন কলকাতায় এসে বারাসাত, বনগাঁ ও সল্টলেকের শরণার্থীশিবির পরিদর্শন করেন।
লন্ডনের টাইমস পত্রিকায় ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়ার নতুন পরিকল্পনাকে পূর্ব বাংলার পরিস্থিতি আরো ভয়াবহ করে তুলবে বলে অভিমত দেন।
বাংলাদেশের শরণার্থীদের জন্য সোভিয়েত ইউনিয়নের একটি জাহাজ ৩,৫৭৬ টন চাল নিয়ে কলকাতা বন্দরে পৌঁছায়। সোভিয়েত ইউনিয়ন মোট ৫০,০০০ টন চাল সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দেয়।
মুক্তিযোদ্ধারা এদিন চট্টগ্রামের দেবীপুরে পাকিস্তানি বাহিনীর অবস্থানের ওপর আক্রমণ চালায়। সংঘর্ষে পাকিস্তানি বাহিনীর কয়েকজন হতাহত হয় এবং মুক্তিযোদ্ধা দলের একজন শহীদ হন। কুমিল্লার দক্ষিণেও মুক্তিযোদ্ধারা পাকিস্তানি বাহিনীর ওপর অ্যামবুশ করে।
বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটি মুজিবনগর থেকে বিবৃতিতে জানায়, ইয়াহিয়া খান সাম্প্রতিক বেতার ভাষণে বাংলাদেশের জনগণের রায়কে উপেক্ষা করে সামরিক শাসন স্থায়ী করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন।
বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির সভাপতি অধ্যাপক মোজাফ্ফর আহমদ বলেন, ইয়াহিয়া গণতন্ত্রকে হত্যা করে বিশ্বকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছেন।
বাংলাদেশ সরকারের কূটনীতিক প্রতিনিধি কে এম শেহাবউদ্দিন দিল্লিতে এক বিবৃতিতে যুক্তরাষ্ট্র সরকারকে সামরিক জান্তার প্রতি সমর্থন পুনর্বিবেচনার আহ্বান জানান।
সূত্র:
১. বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধ: সেক্টরভিত্তিক ইতিহাস, সেক্টর এক ও দুই
২. আনন্দবাজার পত্রিকা ও যুগান্তর, ভারত, ২ ও ৩ জুলাই ১৯৭১
মন্তব্য করুন