বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি এবং ইউনুস কোম্পানির শাসন নিয়ে যখন লিখছিলাম, ঠিক তখনই আমার হাতে বইটি চলে এলো। কী আশ্চর্য!
৫০২ পৃষ্ঠার বই। তাই পড়া সম্ভব হয়নি। অনুবাদকের কথা, সূচিপত্র, এখনও প্রাসঙ্গিক এমন কিছু অধ্যায় পড়ে মনে হলো—পাঠকদের কিছু জানানো দরকার।
অনুবাদকের কথা থেকে, “ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির জন্ম থেকে শুরু করে বিশাল ভারতীয় উপমহাদেশকে তাদের করায়ত্তে আনার কাহিনীসমূহ উইলিয়াম ড্যালরিম্পল ‘দ্য এনার্কি: কর্পোরেট ভায়োলেন্স অ্যান্ড পিলেজ অফ অ্যান এমপায়ার’-এ। যে ভারত এক সময় বিশ্বের অন্যতম প্রধান অর্থনৈতিক শক্তি ছিল, সেই ভারতের প্রাকৃতিক সম্পদের লোভে বেসরকারি মালিকানাধীন একটা কর্পোরেশন কীভাবে অর্ধ-শতাব্দীর কম সময়ে দেশটিকে তাদের উপনিবেশে পরিণত করে জনগণকে চরম দারিদ্র্যের মধ্যে নিক্ষেপ করেছিল, তা উঠে এসেছে এই গ্রন্থে।
তাঁর ভাষ্যে আরও আছে, ১৭৫৭ সালে পলাশীর যুদ্ধে বাংলার নবাব সিরাজউদ্দৌলাকে পরাজিত করার মধ্য দিয়ে ভারতে কোম্পানির শাসনের আনুষ্ঠানিক সূচনা করেছিলেন রবার্ট ক্লাইভ।… ক্লাইভ ছিলেন উচ্চাভিলাষী, ক্ষমতালোভী এবং অর্থলোলুপ।
এই গ্রন্থে ড্যালরিম্পলের মূল বিষয় হচ্ছে, ১৭৫৬ সাল থেকে ১৮০৩ সালের মধ্যে একটি বাণিজ্যিক কোম্পানি কীভাবে মোগল সাম্রাজ্যকে দুর্বল ও খণ্ডবিখণ্ড করার ক্ষেত্রে ভূমিকা রেখেছে, তাকে তিনি “বিশ্ব ইতিহাসের কর্পোরেট সহিংসতার চূড়ান্ত সর্বনাশা অপকর্ম” হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
প্রায় দুই-আড়াই শ’ বছর আগের এই ঘটনাপ্রবাহের সাথে বর্তমান সময়ের পট পরিবর্তনে মিল কতটুকু পাওয়া যাবে জানি না। তবুও পাঠকরা হয়তো ভাববেন।
ক্ষমতায় আসার জন্য সুপ্রিম কোর্টের রায়ের আগের রাতে জন প্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সার্কুলার দিয়ে ৬৬৬ কোটি টাকার কর ফাঁকির রায় বাতিল করা কতটা আইনসম্মত বলা কঠিন।
আরও কত কিছু। মনে রাখতে হবে “উনি রাজনীতিবিদ নয়।” উনি কোম্পানির মালিক। ওনারাই ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি: ভার্সন ২.০। কাজেই সাবধান! এদের চমক আর চটকদারিতে ভুলবেন না। সতর্ক থাকুন।
মন্তব্য করুন