জাতিসংঘ মহাসচিব উ থান্ট আজ নিউইয়র্কে পূর্ব পাকিস্তান থেকে ভারতে শরণার্থীদের ব্যাপক অনুপ্রবেশ নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, “নারী ও শিশুসহ অসংখ্য শরণার্থী প্রতিদিন ভারতে আশ্রয় নিচ্ছে। তাদের জন্য জরুরি সাহায্য প্রয়োজন।” শরণার্থীদের দ্রুত স্বদেশে ফেরত পাঠানোর আশাবাদ ব্যক্ত করে তিনি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে তাত্ক্ষণিক সহায়তার আহ্বান জানান। জাতিসংঘের সকল সংস্থা, সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তিবর্গের কাছে তিনি মানবিক সহায়তা কামনা করেন।
লন্ডন: ব্রিটিশ কমন্স সভায় বিরোধী দল লেবার পার্টির সদস্য ব্রুস ডগলাস-ম্যান বলেন, "পূর্ব বাংলায় পাকিস্তানের সামরিক বিজয় অসম্ভব। এই যুদ্ধের অর্থনৈতিক বোঝা বহন করে পাকিস্তানকে সহায়তা করা অর্থহীন। আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর উচিত পাকিস্তানকে যুদ্ধবিরতিতে বাধ্য করা, যাতে লক্ষ প্রাণ রক্ষা পায়।"
টোকিও: জাপানের প্রভাবশালী সংবাদপত্র আশাহি শিম্বুন পাকিস্তানের সমালোচনা করে সম্পাদকীয় প্রকাশ করে। এতে উল্লেখ করা হয়, “ঘূর্ণিঝড়-পরবর্তী ধ্বংসস্তূপ ও সেনাবাহিনীর দমন-পীড়নের মধ্যেই বাংলাদেশে বর্ষা আসন্ন। দুর্ভিক্ষ ও মহামারি অবধারিত। এমন সংকটে সাহায্য প্রেরণে বাধা দেওয়ায় পাকিস্তানকে জবাবদিহি করতে হবে।”
কায়রো: ভারতীয় সমাজসেবী জয়প্রকাশ নারায়ণ মিসরের নেতৃবৃন্দ ও সাংবাদিকদের উদ্দেশে বলেন, “আরব বিশ্বের উচিত ইয়াহিয়া খানের ওপর চাপ সৃষ্টি করে বাংলাদেশে রক্তপাত বন্ধ করা।”
ভারতে বাংলাদেশের পক্ষে কার্যক্রম
দিল্লি: ভারতের সাবেক মন্ত্রী এম. সি. চাগলা, ভি. কে. কৃষ্ণমেনন ও বিশিষ্ট আইনজ্ঞদের নিয়ে গঠিত সংস্থা বাংলাদেশের স্বীকৃতির পক্ষে একটি বই প্রকাশ করে।
কলকাতা: গ্রামোফোন কোম্পানি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সমর্থনে "বাংলা আমার বাংলা" শিরোনামে দুটি গানের রেকর্ড বের করে। এতে সলিল চৌধুরীর গান ও রবীন্দ্রসংগীত অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। শিল্পীরা রয়্যালটি বাংলাদেশ ত্রাণ তহবিলে দান করার ঘোষণা দেন।
শিক্ষকদের সহায়তা: পশ্চিমবঙ্গের সাতটি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের কমিটি বাংলাদেশী শিক্ষকদের জন্য সাময়িক চাকরির ব্যবস্থা করেন।
সূত্র: পূর্বদেশ, আনন্দবাজার পত্রিকা, যুগান্তর (২০-২১ মে, ১৯৭১)।
মন্তব্য করুন