মুজিবনগরে এদিন বাংলাদেশের গণপ্রতিনিধিদের গুরুত্বপূর্ণ অধিবেশন শুরু হয়। ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম, প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদ ও মন্ত্রিসভার সকল সদস্যের উপস্থিতিতে জাতীয় ও প্রাদেশিক পরিষদের সদস্যরা দিনব্যাপী রুদ্ধদ্বার আলোচনায় অংশ নেন। মুক্তিযুদ্ধের রণকৌশল ও সরকারের কার্যক্রম পর্যালোচনা করা হয় এ বৈঠকে।
ময়মনসিংহ: ভালুকার ভাউলিয়াবাজারে পাকিস্তানি বাহিনীর ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। ১৩ মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন।
নেত্রকোনা: নাজিরপুর বাজারে তুমুল যুদ্ধে কমান্ডার নাজমুল হক, জামাল উদ্দিনসহ ৮ জন শাহাদতবরণ করেন।
কুমিল্লা ও সুনামগঞ্জ: মনোরা সেতু ও সুনামগঞ্জে পাকিস্তানি বাহিনীর সঙ্গে মুক্তিবাহিনীর সরাসরি সংঘর্ষ হয়।
ভারতের ভূমিকা: প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী নব কংগ্রেসের সভায় বলেন, "যুক্তিযুক্ত সময়েই বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেওয়া হবে। আমরা পাকিস্তানের সঙ্গে যুদ্ধ চাই না।" সংসদীয় দলেও যুদ্ধ এড়ানোর সিদ্ধান্ত প্রাধান্য পায়।
সোভিয়েত ইউনিয়ন: রাষ্ট্রদূত পেগভ নিশ্চিত করেন, ইয়াহিয়া খানের গণহত্যার নির্দেশের পর পাকিস্তানে অস্ত্র সরবরাহ বন্ধ করেছে তারা।
যুক্তরাজ্য-পাকিস্তান উত্তেজনা: পাকিস্তান ব্রিটিশ হাইকমিশনকে প্রতিবাদ জানায়, যুক্তরাজ্য-ভারতের যৌথ বিবৃতিকে "অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ" বলে আখ্যায়িত করে।
সিপিএমের দাবি: পশ্চিমবঙ্গের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিএম) বাংলাদেশ সরকারের তাৎক্ষণিক স্বীকৃতি ও মুক্তিযোদ্ধাদের অস্ত্র সহায়তার আহ্বান জানায়।
গণ-আদালতের রায়: কলকাতায় নব কংগ্রেসের আয়োজনে ২০টি স্থানে একযোগে গণ-আদালত বসে। ইয়াহিয়া ও ভুট্টোকে "যুদ্ধাপরাধী" ঘোষণা করে তাদের গ্রেফতারের পরোয়ানা জারি করা হয়।
পিপিপি নেতা জুলফিকার আলী ভুট্টো করাচিতে সতর্ক করেন, "ভারতের হুমকি মোকাবিলায় জনপ্রতিনিধিদেরই দায়িত্ব নেওয়া উচিত।"
সূত্র: বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধের সেক্টরভিত্তিক ইতিহাস, ইত্তেফাক, আনন্দবাজার পত্রিকা (৬-৮ জুলাই ১৯৭১)।
মন্তব্য করুন