

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনুস এবং তাঁর প্রেস সচিব শফিকুল ইসলাম—অথবা যিনি ‘ডাস্টবিন শফিক’ নামেই বেশি পরিচিত—এই দু’জনে এখন অবলীলায়, শিশুসুলভ হাসি মুখে মিথ্যে কথা বলার দুর্দান্ত প্রতিযোগিতায় নেমেছেন। দু’জনেই এত সুন্দর করে মিথ্যে বলেন যে বোঝার উপায় থাকে না।
ইন্টারিম প্রধান তো হাত-পা নেড়ে অদ্ভুত সব স্বপ্ন দেখান—মনে হয় সবই সত্যি। কয়েক সপ্তাহের মধ্যে বন্দরে সব আন্তর্জাতিক অপারেটর এনে যাদু দেখিয়ে দেবেন। অথচ এরা অনেকেই ২০২২-২৩ সালেই চুক্তি করে বসে আছে, এ খবরটাই নেই। শুধু চুক্তির শর্তগুলো বদলে গেছে। আর নিউ মুরিং তো কোনোদিনই বাইরের কারো হাতে দেওয়ার কথা ছিল না।
কখনো কখনো তাঁদের কথা শুনলে মনে হয়—অন্ধ, কালা, বধির। সবকিছুই নাকি ঠিক আছে। আইনশৃঙ্খলা, অর্থনীতি, দৈনন্দিন জীবন, দ্রব্যমূল্য—সবই নাকি ঠিক আছে, বরং উন্নতিই হয়েছে। কিন্তু মানুষ বলছে ভিন্ন কথা, বাজার বলছে ভিন্ন কথা।
আর ‘ডাস্টবিন শফিক’ তো এক কাঠি উপরে। মনে হয় উনিই আসল প্রধান উপদেষ্টা, উনিই মহারাজা। দেদারছে মিথ্যে বলায় এখন কেউ আর তাঁদের কথা বিশ্বাস করে না। ফলে পুরো সমাজে গড়ে উঠেছে এক অবিশ্বাসের রাজত্ব। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়া—যে যার মতো বলে যাচ্ছে, গড়ে তুলেছে এক অবিশ্বাসের সংস্কৃতি।
খালেদা জিয়া কি জীবিত না মৃত? তোফায়েল আহমেদ কি এখনো বেঁচে আছেন? কাতারের আমিরের অ্যাম্বুলেন্সে যান্ত্রিক ত্রুটি? জেনারেল ওয়াকার ছুটছেন লালমনিরহাটে। ইন্টারিম মহাজন ‘গ্রেটার বেঙ্গল’-এর নতুন মানচিত্রও উপহার দিচ্ছেন। বাজারে সবকিছুর দাম কমছে, চাকরির সুযোগ হু হু করে বাড়ছে। বিদেশের সবাই হাত জোড় করে বলছে—‘আমাদের তরুণ কর্মী দাও’। আবার ভিসা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে যত্রতত্র।
নোবেল শান্তি পুরস্কার আছে, কিন্তু অবলীলায় মিথ্যে বলার জন্য এখনো কোনো পুরস্কার ঘোষণা করা হয়নি। আমাদের দেশের এই দুই মহান অভিনেতার জন্য বোধ হয় আলাদা একটা পুরস্কার চালু করা দরকার। কিন্তু এখন প্রশ্ন উঠবে কে পাবে এই পুরস্কার- ইউনুস না শফিক?
লেখক: রাজনৈতিক বিশ্লেষক
মন্তব্য করুন