সিরিয়ার অন্তর্বর্তীকালীন প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল-শারা ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার জন্য গোপনে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন বলে দাবি করেছেন সাবেক ব্রিটিশ কূটনীতিক ক্রেইগ মারে। মিডল ইস্ট মনিটরকে দেওয়া এক বিবৃতিতে তিনি জানান, পূর্বে যিনি ‘আবু মোহাম্মদ আল-জোলানি’ নামে পরিচিত ছিলেন, সেই আল-শারা এই প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন যুক্তরাজ্যকে।
ক্রেইগ মারের দাবি অনুযায়ী, ২০২৬ সালের শেষ নাগাদ সিরিয়া আনুষ্ঠানিকভাবে ইসরায়েলকে স্বীকৃতি দেবে এবং দুদেশের মধ্যে রাষ্ট্রদূত বিনিময়ও হবে।
তিনি আরও বলেন, এই পদক্ষেপের মূল লক্ষ্য হলো—পশ্চিমা দেশগুলোর কাছ থেকে বড় অঙ্কের আর্থিক সহায়তা নিশ্চিত করা এবং সিরিয়ার ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া।
সাবেক এই কূটনীতিক বলেন, “আমি জিজ্ঞাসা করেছিলাম, ইসরায়েলি বাহিনীর সিরিয়া থেকে প্রত্যাহার কি চুক্তির অংশ? আশ্চর্যের বিষয় হলো, কোনো পক্ষই এই বিষয়টি উত্থাপন করেনি।”
যুক্তরাজ্যের দৃষ্টিভঙ্গি অনুযায়ী, এটি একটি “দ্বিপক্ষীয় বিষয়”—যা সিরিয়া ও ইসরায়েলের মধ্যে সমাধানযোগ্য।
মারে উল্লেখ করেছেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নের ‘এক্সটার্নাল অ্যাকশন সার্ভিস’-এর ‘ডিরেক্টরেট জেনারেল ফর ইন্টারন্যাশনাল পার্টনারশিপ’ বিশ্বাস করে, আল-জোলানির অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অবস্থান গত ১৭ মার্চ ব্রাসেলসে অনুষ্ঠিত ‘ইইউ প্লেজিং কনফারেন্স’-এ দেওয়া প্রতিশ্রুতিগুলোর সঙ্গে সংগতিপূর্ণ।
ওই প্রতিশ্রুতিগুলোর মধ্যে রয়েছে—আলভি ও খ্রিস্টান সম্প্রদায়কে সরকারে অন্তর্ভুক্ত করা এবং নারীদের মন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দেওয়া। তবে, মারে জানান, বাস্তবে এসব প্রতিশ্রুতি সীমিত পর্যায়ে পালন করা হয়েছে। কারণ, গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়গুলো যেমন প্রতিরক্ষা, পররাষ্ট্র, অর্থ ও স্বরাষ্ট্র—সবই আল-জোলানির অনুসারীদের নিয়ন্ত্রণে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ব্রাসেলস সম্মেলনে সিরিয়ার জন্য ৫.৫ মিলিয়ন ইউরো বা প্রায় ৬.২৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ঋণ ও অনুদান দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়। এর অর্ধেক অর্থ সরাসরি ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে আসবে।
ক্রেইগ মারে আরও অভিযোগ করেন, আল-জোলানি সিরিয়ায় ব্রিটিশ গোয়েন্দা সংস্থা এমআই-৬ এবং যুক্তরাজ্যের বিশেষ বাহিনীর সক্রিয় সমর্থন পাচ্ছেন। তাঁর মতে, পশ্চিমা পৃষ্ঠপোষকদের চূড়ান্ত লক্ষ্য হলো—আল-জোলানির নেতৃত্বে একটি ইসরায়েলপন্থী সরকার গঠন ও তা সুসংহত করা।
মন্তব্য করুন