ভারতশাসিত কাশ্মিরের পহেলগামে বন্দুকধারীদের হামলায় দুই বিদেশিসহ অন্তত ২৬ পর্যটক নিহত হয়েছেন। এই মর্মান্তিক ঘটনায় বিশ্বজুড়ে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে—এই হামলা কারা চালিয়েছে? আর কেনই বা চালানো হয়েছে?
ভারতের সংবাদমাধ্যমগুলো দাবি করছে, এই হামলার পেছনে রয়েছে পাকিস্তানভিত্তিক নিষিদ্ধ সন্ত্রাসী সংগঠন লস্কর-ই-তৈয়েবার সঙ্গে সম্পর্কিত একটি গোষ্ঠী। ‘দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস’-এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়, দক্ষিণ কাশ্মিরের পেহেলগামের বাইসরান এলাকায় পর্যটকদের ওপর চালানো এই সন্ত্রাসী হামলার দায় স্বীকার করেছে ‘দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট’ (টিআরএফ)। এটি লস্কর-ই-তৈয়েবারই একটি ছায়া সংগঠন বলে জানায় ভারতের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থাগুলো।
অন্যদিকে, আন্তর্জাতিক বার্তা সংস্থা রয়টার্স এবং দ্য গার্ডিয়ান জানিয়েছে, ‘কাশ্মির রেজিস্ট্যান্স’ নামে একটি অখ্যাত স্থানীয় সশস্ত্র গোষ্ঠী এই হামলার দায় স্বীকার করেছে। তাদের দেওয়া এক বার্তায় বলা হয়েছে, কাশ্মীরে ৮৫ হাজারের বেশি ‘বহিরাগত’ বসবাস শুরু করায় জনসংখ্যার কাঠামো পাল্টে যাচ্ছে। এরই প্রতিবাদে তারা এই হামলা চালিয়েছে বলে দাবি করেছে গোষ্ঠীটি। রয়টার্স অবশ্য এই দাবির স্বতন্ত্র উৎস যাচাই করতে পারেনি।
টিআরএফ কারা?
২০১৯ সালে ভারত কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা (অনুচ্ছেদ ৩৭০) বাতিল করার পর ‘দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট’ বা টিআরএফ গঠিত হয়। ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ভাষ্য অনুযায়ী, এটি মূলত লস্কর-ই-তৈয়েবারই একটি রিব্র্যান্ডিং। কারণ পাকিস্তান চেয়েছিল কাশ্মীরি সশস্ত্র আন্দোলনকে ধর্মীয় পরিচয়ের বদলে ‘জনগণের প্রতিরোধ’ হিসেবে তুলে ধরতে।
টিআরএফ প্রথমে অনলাইনে সক্রিয় হয়ে বিভিন্ন প্রচারণা চালায়, পরে কাশ্মীরে মাটিতে সক্রিয় হয়। তারা অস্ত্র ও মাদক চোরাচালান, অনুপ্রবেশ, স্থানীয় যুবকদের দলে ভেড়ানো এবং নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য ও সাধারণ মানুষকে লক্ষ্য করে হামলার সঙ্গে যুক্ত থাকে। সংগঠনটি একাধিকবার কাশ্মীরি সাংবাদিকদের হুমকি দিয়েছে এবং অনেকে সেই হুমকির মুখে চাকরি ছাড়তে বাধ্য হন।
২০২৩ সালে টিআরএফকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে চিহ্নিত করা হয় এবং সংগঠনটির নেতা শেখ সাজ্জাদ গুলকে ইউএপিএ আইনের অধীনে ‘সন্ত্রাসী’ হিসেবে ঘোষণা করে ভারত।
মন্তব্য করুন